বৃহস্পতিবার, ০৮ মে ২০২৫, ০৪:৫৮ পূর্বাহ্ন
দৈনিকবিডিনিউজ৩৬০ ডেস্ক : নারায়ণগঞ্জে ১৫ বছরের এক কিশোরীকে অপহরণ করে গণধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করে শীতলক্ষ্যা নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে, তিন আসামি আদালতে এমন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিই দিয়েছিলেন।
এই ঘটনায় তিনজনই কারাগারে আছেন। অথচ ৫১ দিন পর সেই কিশোরীকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। কিশোরী এখন একজনকে বিয়ে করে সংসার করছে।
নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান এ বিষয়ে বলেন, ওই কিশোরীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে বলে সপ্তাহ দুয়েক আগে তিন আসামি অটোরিকশা চালক রকিব (১৯), আব্দুল্লাহ (২২) ও মাঝি খলিল (৩৬) আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
নিখোঁজ হওয়ার ৫১ দিন পর মেয়েটি বাড়িতে টাকা চেয়ে ফোন করলে পরিবারের সবাই নিশ্চিত হন, মেয়েটি বেঁচে আছে। পরে পরিবারের পক্ষ থেকে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। পুলিশ রোববার কিশোরীকে উদ্ধার করে। ওই কিশোরীর স্বামী ইকবালকে আটক করা হয়েছে।
ইকবাল প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশে জানিয়েছেন, তাঁরা বিয়ে করে বন্দর এলাকায় একটি বাড়িতে বসবাস করছেন। যে মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে বলে তিন আসামি স্বীকার করেছেন, সেই মেয়ে জীবিত আছে। তাহলে তাঁরা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেন কেন?
ওসি আসাদুজ্জামান, নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার পুলিশ বলছে, গত ৪ জুলাই শহরের দেওভোগ এলাকার বাড়ি থেকে বের হয়ে ওই কিশোরী নিখোঁজ হয়। তাকে না পেয়ে প্রায় মাসখানেক পর ৬ আগস্ট নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় অপহরণ মামলা করেন তার বাবা।
মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, আসামি আব্দুল্লাহ তাঁর মেয়েকে স্কুলে যাওয়া-আসার পথে উত্ত্যক্ত করতেন। গত ৪ জুলাই আব্দুল্লাহ ও তাঁর সহযোগীরা মেয়েকে অপহরণ করেছেন। মামলার পর পুলিশ ওই মেয়ের মায়ের মুঠোফোনের কললিস্ট চেক করে অটোরিকশা চালক রকিবের সন্ধান পায়। ওই নম্বর দিয়ে আব্দুল্লাহ মেয়েটির সঙ্গে যোগাযোগ করতেন। ঘটনার দিনও ওই নম্বর দিয়ে ফোন করেন আব্দুল্লাহ।
এ ঘটনায় পুলিশ অটোরিকশা চালক রকিব, আব্দুল্লাহ ও খলিলকে গ্রেপ্তার করে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাঁরা নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মিল্টন হোসেন ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আহমেদ হুমায়ুন কবিরের পৃথক আদালতে ওই কিশোরীকে গণধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ শীতলক্ষ্যা নদীতে ভাসিয়ে দেওয়ার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়।
বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার (এসপি)জায়েদুল আলম, বলেন, গণধর্ষণ ও হত্যার দায় স্বীকার করে ৩ আসামীর জবানবন্দীর পরও ভিকটিম উদ্ধার হওয়ার ঘটনায় ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাটনে এ কমিটি গঠন করা হয়।
সোমবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এডিশনাল এসপি ডিবিকে প্রধান করে কমিটিতে রাখা হয়েছে সহকারী পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) ও ডিআই-১কে।
এসএস